Monday, December 29, 2014

১৬২ আরোহীসহ বিমান নিখোঁজ

এক বছরে ৩টি মালয়েশিয়ান বিমান নিখোঁজের ঘটনা


ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে যাত্রা করা এয়ার এশিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমান গতকাল রোববার নিখোঁজ হয়েছে। চলতি বছর এ নিয়ে তিনটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হল মালয়েশিয়ান বিমান। একের পর এক বিমান দুর্ঘটনায় বিশাল অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশটির সমৃদ্ধ বিমান ও পর্যটন শিল্প। স্বাভাবিকভাবেই দুর্ঘটনাগুলোর পেছনে অন্য কোনো ঘটনা আছে কি না সে প্রশ্নও উঠে এসেছে। গতকাল সকালে এয়ার এশিয়ার কিউজেড ৮৫০১ যাত্রীবাহী বিমানটি ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়ে যায়। বিমানটিতে মোট ১৬২ আরোহী ছিল। মালয়েশিয়াভিত্তিক এয়ার এশিয়া কোম্পানিটির ৪৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক ইন্দোনেশিয়া। এর আগে ৮ মার্চ ২৩৯ আরোহী নিয়ে নিখোঁজ হয় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের এমএইচ৩৭০ বিমান। বিমানটি নিখোঁজের ঘটনা আজও রহস্য হিসেবেই রয়ে গেছে। নানা দেশ মিলে অনেক তত্ত্ব-তালাশের পরও সেই রহস্যের কোনো কিনারা হয়নি। এখনও নিখোঁজদের অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন তাদের স্বজনরা।
ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে ১৭ জুলাই মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত হয়। এ ঘটনায় এমএইচ১৭ বিমানটিতে থাকা ২৯৮ আরোহীর সবাই নিহত হয়। ওই ঘটনার জন্য একে অপরকে দায়ী করে আসছে ইউক্রেন ও রাশিয়া। অর্থনীতির দিক থেকে এশিয়ার অন্যতম সমৃদ্ধ দেশ মালয়েশিয়া একই বছর বড় ধরনের তিনটি দুর্ঘটনার রেশ কাটিয়ে উঠতে পারবে কি না এ নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি উঠে আসছে ষড়যন্ত্রের বিষয়টিও। প্রথম দুইটি দুর্ঘটনার পর মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স বিশাল অঙ্কের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। জনমনে ভীতি সৃষ্টির পাশাপাশি পড়ে যায় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের মূল্য। এমনকি প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও প্রকাশ করেছে মালয়েশিয়ান সরকার। বিশ্বব্যাপী যাত্রী পরিবহনে জনপ্রিয়তা লাভ করা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এ প্রতিষ্ঠানটি হুমকির মুখে পড়ার পাশাপাশি দেশটির বিমান যোগাযোগ ও পর্যটন ব্যবসায়ও অনেকটা ভাটা পড়েছে। এ অবস্থায় প্রতিযোগিতাকারী অন্য দেশের এয়ারলাইন্সগুলো ব্যবসায়িকভাবে কতটা লাভবান হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এ ঘটনাগুলোতে অন্য দেশের এয়ারলাইন্সগুলোর জড়িতের বিষয়টিও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আরেকটু গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমানগুলো নিজ দেশে দুর্ঘটনার শিকার হয়নি। প্রত্যেকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে অন্য দেশ বা সমুদ্র সীমানায়। এ ঘটনায় স্বাভাবিকভাবে অন্য রাষ্ট্র বা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জড়িতের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক সুবিধা ছাড়াও রাজনৈতিক বিবেচনাটিও গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনায় রুশপন্থী বিদ্রোহী ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে জনসমর্থন আদায়ে অনেকটাই এগিয়ে যায় পশ্চিমা দেশগুলো। এ ঘটনার নির্মম বলি হয় মালয়েশিয়ান বিমান ও নেদারল্যান্ডসের নাগরিকরা। কিন্তু সুবিধা লাভ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো। সর্বশেষ ঘটনাটির মোটিভ এখনও স্পষ্ট না হলেও এটা নিছক দুর্ঘটনা না পরিকল্পিত তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।-ডেসটিনি ডেস্ক

No comments:

Post a Comment