নলছিটিতে গভীর রাতে মা-বাবাকে বেঁধে রেখে ঘুমন্ত স্কুল ছাত্রীর সর্বনাশ!
বিচারের বানী কাঁদছে নিরবে নিভৃতে...
রিপোর্ট এস. এম রফিকুল ইসলামদরিদ্র পরিবারের অপরুপা সুন্দরী কিশোরী সেতু (ছদ্মনাম) শিশির ভেজা লাউ শাকের ডাটার ন্যায় বেড়ে উঠতেছিল। অভাব অনটনের সংসারে মনে বড় আশা নিয়ে সমাজের আরো ১০টি মেয়ের মত নিজের ভবিষ্যত জীবন সাঁজাতে চেয়েছিল সে। সাত সকালে ঘুম থেকে জেগে ফ্রেশ হয়ে পড়ার টেবিলে বসে লেখাপড়ার পাশাপাশি ভাঙ্গা বেড়ার ফাঁকা দিয়ে সকাল বেলার মিষ্টিমাখা রোদ্দুর ও বউ কথা কও, বউ কথা কও পাখির ডাক শুনতেও ভূল করতো না সে। মনে বড় সাধ ছিলো লেখাপড়া করে বড় হয়ে অসহায় মা বাবার মুখে হাসি ফোটাবে। পরে বিয়ের পিড়িঁতে বসে মনের মাধুরী মিশিয়ে দেহ মনপ্রান দিয়ে ভালবাসা বিনিময় করবে, যে পুরুষটি সেতুকে নিজের চেয়েও বেশি আপন করে নিবে। হৃদয়ের সবগুলো ভালোবাসা উজার করে দিয়ে একখানা সুখের সংসারের রমনী হয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন ছিল কোমলমতি মেয়েটির। কিন্তু মেয়েটির জীবন নিয়ে সকল স্বপ্ন জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটে তখনি যখন স্কুলে আসা যাওয়ার পথে এক অপোকৃত প্রভাবশালী পরিবারের বখাটে পুত্র রায়হানের নজরে পড়ে সে। প্রথম দেখার পর থেকেই দেখতে শোনতে সদ্য ফোটা গোলাপ নলছিটি বালিকা বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী সেতুর পিছু নেয় বখাটে রায়হান। প্রথমে প্রেম নিবেদন পরে কু-প্রস্তাব এবং নানা ভয়ভীতি মেধাবী ছাত্রী সেতুর স্কুলে আসা বন্ধ করতে পারেনি। অন্য দিকে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবার ভয়ে মা বাবাকে বিষয়টি খুলে বলতে পারেনি সে। দিন যতই সামনের দিকে এগুতে থাকে সেতু নামের সদ্য ফোটা গোলাপের পাপড়ী ছিড়ে নিতে ততোই ব্যাকুল হয়ে পড়ে রায়হান। বিষয়টি নিয়ে রায়হান ও তার বন্ধুদের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির কারনে সেতুর মা বাবা একদা টের পেয়ে যায় এবং বখাটের হাত থেকে মেয়েকে রার আর কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে অবশেষে তারা মেধাবী ছাত্রী সেতুর স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এতে সেতু ও তার মা বাবার উপর আরো প্তি হয় মল্লিকপুর গ্রামের হাবিব হাওলাদারের বখাটে পুত্র রায়হান। বন্ধুদের সাথে শলা পরামর্শ করে সবে মাত্র ১৫’তে পা দেয়া সেতু নামের একটি সদ্য ফোটা ফুলের মধু লুফে নিতে বেপরোয়া হয়ে উঠে ২১ বছর বয়সী ভবঘুরে এ যুবক। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৪সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে বন্ধুদের সাথে নিয়ে সূর্ষ্যপাশা গ্রামে সেতুদের বাড়িতে গিয়ে রায়হান সেতুর মায়ের কাছে জানতে চায় তার মেয়ে কোথায় আছে। উত্তরে সেতুর মা মেয়ে বাড়িতে নেই জানালে তাকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে আঙ্গুল উচিয়ে চলে আসে রায়হান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। একইদিন গভীর রাতে (অনুমান ৩টা) সেতুদের ঘরের সামনের পিড়ায় সিঁদকেটে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে রায়হান ও তার ৩ বন্ধু। মূহুর্তের মধ্যে তারা মূর্তিমান রুপ ধারন করে সেতুর মা বাবা ও ভাইকে বেঁধে ফেলে। তাদের ডাক চিৎকারে মায়ের পাশে ঘুমিয়ে থাকা সেতু সজাগ হয়ে দেখতে পায় রায়হানসহ তার পাশে আরো ৩ যুবক দাড়িয়ে আছে। এসময় নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সেতুকে ধর্ষন করে দীর্ঘদিন সেতুর পিছনে কু-মতলব নিয়ে ঘুরে বেড়ানো রায়হান। ধর্ষিতা সেতু (ছদ্মনাম) জানায় রায়হান তাকে জোর পূর্বক ধর্ষন করে, ধর্ষনের পর সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। সেতুর মা জানায় বখাটেরা তাকেও ধর্ষন করার জন্য পরনের সেলোয়ার খুলে ফেলেছিল। কিন্তু জরায়ু অপারেশন করা হয়েছে বলে হাত পা ধরে রা পেয়েছে সে। ঘটনার পরদিন নলছিটি থানায় এসআই ফিরোজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তার কথামত ঔদিন দুপুর ১২টায় থানায় গেলে এসআই ফিরোজ একটি চুরির এজাহার লিখে ধর্ষিতা সেতুর বাবা বেলায়েতের স্বার নেয়। স্বার করার সময় বিষয়টি আঁচ করতে না পারলেও পরে এজাহার পড়াইয়া শুনতে পান মামলায় ধর্ষনের কোন কথাই উল্লেখ করা হয় নাই। একটি চুরির মামলা থানায় এজাহার হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। পরে বিষয়টি মিডিয়ার কল্যানে প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্তৃপ অবগত হলে নলছিটি থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং পরে ধর্ষনের সম্পুরক এজাহার রেকর্ড করেন। নলছিটি থানার মামলা নং-০৭। ঘটনার ৩ দিন পর ভিকটিমকে থানা পুলিশ দিয়ে মেডিকেল চেকআপের জন্য ঝালকাঠি সিভিল সার্জন অফিসে পাঠিয়ে দেয়া হয়। বার-বার ধর্না দিয়েও ভিকটিমের পরিবার মেডিকেল রির্পোট হাতে পায়নি কিংবা জানতে ও পারেনি রির্পোটে কি এসেছে। প্রথমে এসআই ফিরোজ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান। পরে নলছিটি থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মাকসুদুর রহমান নিজেই তদন্তভার গ্রহন করেন। ধর্ষকের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ার কারনে এক রকম ন্যায় বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছে ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রী সেতুর পরিবার। তাদের ভাষ্যমতে যেখানে প্রথমেই ধর্ষনের পরিবর্তে চুরির মামলা রেকর্ড করেছে পুলিশ, সেখানে কতটুকু ন্যায় বিচার আশা করা যায়। অন্যদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নলছিটি থানার ওসি তদন্ত জানান, ধর্ষিতার যে ডাক্তারি সনদ হাতে পাওয়া গেছে, তাতে ধর্ষনের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। ইতোমধ্যে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নিজস্ব গতিতে স্কুলছাত্রী সেতু ধর্ষিত হওয়ার ঘটনাটির তদন্ত করেছেন। তারা কোমলমতি নিরপরাধ নিষ্পাপ স্কুল ছাত্রী সেতুকে বখাটে কর্তৃক ধর্ষন এবং ঘটনা ধামাচাপা দিতে থানা পুলিশের চুরির মামলা নেয়াকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছেন। এবিষয়ে প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্তৃপরে হস্তপে ও বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজনীতা রয়েছে বলে মনে করছেন সুজন তদন্ত কমিটি। প্রিয় পাঠক, যেহেতু বিষয়টি থানা পুলিশ কর্তৃক তদন্তাধীন রয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বক্তব্যে একথা স্পষ্ট যে তদন্ত রিপোর্ট ধর্ষিতার পে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই ভিকটিম যদি হাজারো মানুষের সামনে ল ল বার চিৎকার করেও বলে বেড়ায় তিনি ধর্ষিত হয়েছেন, তাহলেও প্রমান করতে পারবেন না। তদন্তকারী কর্মকর্তা নিজেরও ডাক্তারি সনদের প্রভাবে সেতু ধর্ষিত হয়েছে একথা বলার কোন সুযোগ নেই। যেহেতু ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ডাক্তার খুরশিদ জাহান তার রিপোর্টে সেক্সুয়াল এ্যাসাল্ট কিংবা রেপ হয়েছে বলে উল্লেখ করেননি। প্রিয় পাঠক, রায়হান ও তার বন্ধুদের কর্তৃক সেতু ধর্ষণের বিষয়টি যেহেতু তদন্তাধীন তাই এবিষয়ে কোন ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করতে চাইনা। তবে কয়েকটি বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে চাই প্রভাবশালীদের কাছে দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া সুন্দরী কন্যাদের ইজ্জতের কোন মূল্য নেই। কুমারীর অমূল্য সম্পদ সতীত্ব বখাটেদের হাতে বিসর্জন দেয়ার যে বুক ফাটা কষ্ট তা কেউ বুজতে চায় না। কেননা প্রভাবশালী কিংবা অর্থবিত্তের কাছে কতিপয় মানুষের মনুষত্ব ও বিবেক পরাজয় বরন করে। আর বিচারের বানী কেঁদে বেড়ায় নিরবে নিভৃতে। প্রিয় সাথীরা আজ আর নয়, এখানেই বিদায় নিব। ফিরে আসবো আগামী রবিবার অন্য কোন সত্য ঘটনা অবলম্বনে। সেই পর্যন্ত সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন, আমাদের সাথেই থাকুন এই প্রত্যাশায় আল্লাহ হাফেজ।
No comments:
Post a Comment