Tuesday, December 16, 2014

আ.লীগ মুক্তিযুদ্ধকালীন দল, মুক্তিযুদ্ধের নয় : তারেক রহমান



বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ মুজিব এখন আওয়ামী লীগের লালসালু। এই লালসালুকে ঘিরে থাকা ভণ্ডরাই নিজেদের স্বার্থে যাকে তাকে রাজাকার আখ্যা দেয়। আওয়ামী লীগ দাবি করে তাদের দল নাকি মুক্তিযুদ্ধের দল অথচ চোরের দল চাটার দল আখ্যা দিয়ে শেখ মুজিব নিজেই আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। বাস্তবতা হলো, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকালীন দল বটে তবে মুক্তিযুদ্ধের দল নয়। এ দলের অধিকাংশ নেতাই মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশ নেননি।

বাংলাদেশের ৪৪তম বিজয় দিবস উপলে যুক্তরাজ্য বিএনপির আটদিনের অনুষ্ঠানমালার সপ্তম দিনে সোমবার ইস্ট লন্ডনের দ্য অট্রিয়াম অডিটরিয়ামে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদারদের আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে একমাত্র মুক্তিযুদ্ধের উপ অধিনায়ক সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান এ কে খন্দকার উপস্থিত ছিলেন। তারেক রহমান প্রশ্ন রাখেন, এখন তাকে রাজাকার আখ্যা দিয়ে কি বাংলাদেশের বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়নি?

সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস। যুক্তরাজ্য বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেনন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক মন্ত্রী মীর নাসির, বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাডভোকেট রহুল কবীর রিজভী, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান প্রমুখ।

তারেক রহমান বলেন, শেখ মুজিব ২৫ মার্চ রাতে স্বাধীনতাকামী জনগণের উপর হামলার আগ পর্যন্ত ইয়াহইয়া খানের সাথে ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য আলোচনা চালিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতাকামী জনগণ তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খায়েশ নস্যাত করে দিয়েছিলো।

তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে শেখ মুজিবকে জোর করে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই ইতিহাস বিকৃতি করা হচ্ছে।

তারেক রহমান বলেন, দেশে এখন গণতন্ত্র নেই। মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা নেই, বাক স্বাধীনতা নেই। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই। প্রতিদিনই মানুষ গুম হচ্ছে খুন হচ্ছে। দুর্নীতি লুটপাট এখন সর্বগ্রাসী। জনগণের হাজার হাজার টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে।

তারেক রহমান বলেন, একটার পর একটা অপকর্ম করে শেখ হাসিনা বিপদে পড়লেই জনগণকে ধোকা দিতে মুক্তিযুদ্ধ কিংবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করেন।

তারেক রহমান বলেন, শেখ মুজিব কখনই বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে নয় আন্দোলন করেছিলেন পূর্বপাকিস্তানের স্বায়ত্বশাসনের জন্য। শেখ মুজিব স্বাধীনতা চাননি বলেই সুযোগ পেয়েও মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেননি।

তারেক রহমান অভিযোগ করেন, পাকিস্তান আমলের পুরো সময়টাতে শেখ মুজিবের রাজনৈতিক জীবনে কোথাও কোনো সমাবেশে প্রকাশ্যে কখনোই তার মুখ থেকে কেউ বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা উচ্চারিত হতেও শোনেনি। শেখ মুজিব চেয়েছিলেন ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে।

তিনি বলেন, শেখ মুজিব তো নয়ই তার পরিবারও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি। এ প্রসঙ্গে তিনি ভাষা সৈনিক ও রাজনীতিবিদ মরহুম অলি আহাদের জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫-১৯৭৫ বই থেকে ডেপুটি এসিস্টেন্ট সেক্রেটারি ক্রিস পারভেন এর মার্কিন সিনেট সাব কমিটির শুনানীর একটি বক্তব্যের উদ্ধৃতি দেন।

শুনানীতে বলা হয়, 'শেখ মুজিবুর রহমানের ঢাকায় অবস্থানকারী পরিবারের ব্যয় বহনে বেগম ফজিলাতুন্নেসাকে প্রতিমাসে ১৫শ' টাকা করিয়া মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করিয়াছিলেন।'

তারেক রহমান বলেন, আধাবেলা একবেলা খেয়ে না খেয়ে লাখো মানুষ যখন রণাঙ্গনে; শেখ মুজিবের পরিবার তখন খুনী ইয়াহিয়া খানের পয়সায় খান সেনাদের পাহারায় ঢাকায় নিরাপদে দিন কাটিয়েছেন।

দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে দেয়া বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, ১৯৫ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে ছেড়ে দেয়ায় শেখ মুজিবের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ১৯৭১ এ পাকিস্তানের দোসর যারা ইয়াহিয়া টিক্কা খানের রুপী খেয়ে ঢাকায় আয়েশে নয়মাস কাটিয়ে দিয়েছেন দেশ ও গণতন্ত্র এখন তাদের কাছে বন্দী। আবারো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে চলমান অপশাসন থেকে জনগণকে মুক্ত করে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে বেগম খালেদা জিয়ার দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান হানার তারেক রহমান।-আমাদের প্রতিদিন ডটকম

No comments:

Post a Comment